অক্টেবরের প্রথম দিকে হওয়ার কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন। কিন্তু সেই নির্বাচন বানচালে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন ঢাকার ক্লাব সংগঠকেরা। তাঁরা এমনও অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দেশের ক্রিকেট সংগঠকদের সম্মানহানি করা হয়েছে।
আজ বিকেলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনকক্ষে ঢাকা লিগের ৭৬টি ক্লাবের সংগঠকদের সংগঠন ‘ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ শঙ্কার কথা জানিয়ে সংগঠকদের সম্মানহানির অভিযোগও করেন সংগঠনের সভাপতি ও বিসিবির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক বোরহানুল হোসেন।
বোরহানুল হোসেন বলেন, বিসিবিতে ‘নব্য ফ্যাসিস্ট’রা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিসিবির আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে চক্রান্ত হচ্ছে। সংগঠকদের নানাভাবে অসম্মান করা হচ্ছে। পরে এক প্রশ্নের জবাবে সভাপতি রফিকুলও একই কথা বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, অ্যাডহক কমিটি করে বোর্ড পরিচালনার চক্রান্ত হচ্ছে। বিসিবির গঠনতন্ত্রে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে বোর্ড চালানোর কথা নেই। অ্যাডহক কমিটি যে রকম পরিবেশ–পরিস্থিতিতে করার প্রয়োজন পড়ে, সে রকম পরিবেশ–পরিস্থিতিও এখন নেই। আমরা নির্বাচন চাই।’
কিন্তু ষড়যন্ত্র কে বা কারা করছে, সেই প্রশ্নে যেন ক্লাব সংগঠকদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না! নির্দিষ্ট কোনো উত্তরই নেই তাঁদের। কখনো বলেন, ‘আমরা শুনেছি’, কখনো বলেন, ‘এটা ওড়া কথা। জানি না, কারা এসব করছে…।’
ক্রিকেট সংগঠকদের কে, কীভাবে অসম্মান করল, সে প্রশ্নেও সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই রফিকুলের, ‘আমি নাম বলতে চাই না, তবে আপনারা দেখেছেন, একজন সংগঠকের ব্যক্তিগত কিছু বিষয় সামনে এনে তাঁকে অসম্মানিত করা হচ্ছে। তাঁর ক্রিকেট সংগঠক পরিচয়ের সঙ্গে এগুলো মেলানো উচিত নয়। যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা ক্রিকেটের ভালো চায় না।’
তিনি নাম না বললেও এটা স্পষ্ট যে আলোচিত সেই সংগঠক বিসিবির পরিচালক মাহবুবুল আনাম, সম্প্রতি যাঁর ব্যক্তিগত কিছু বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, মাহবুবুল আনাম ও তাঁর স্ত্রী অবৈধভাবে ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিকত্ব নিয়েছেন।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই গত বুধবার মাহবুব জানান, তিনি এবার বিসিবির নির্বাচনে অংশ নেবেন না। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর এমন সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বোরহানুল এটিকে মাহবুবের ব্যক্তিগত বিষয় বলে এড়িয়ে যান। পরে অবশ্য এক প্রশ্নে বলেন, ‘আমার মনে হয় না, কারোরই ওনার (মাহবুব) সঙ্গে কাজ করতে কোনো অস্বস্তি আছে। ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে ওনার তুলনা হয় না।
বিসিবির আগামী নির্বাচন বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুসারে হতে হবে বলে দাবি ক্লাব সংগঠকদের। তাঁরা বলেন, গঠনতন্ত্রে যদি কোনো পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হয়, সেটি পরে বার্ষিক সভা বা বিশেষ সভা ডেকে করতে হবে। জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি নিয়ে সংগঠনের সভাপতি রফিকুলের মন্তব্য, ‘অ্যাডহক কমিটিগুলো থেকে যোগ্য অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে বিসিবির কাউন্সিলর অ্যাডহক কমিটি থেকেই আসতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই। আশা করি, যোগ্যরাই বিসিবির কাউন্সিলর হবেন।’
