সাংবাদিক আতিক: রংপুরে মহান সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে মাদক ব্যবসা ও নারী ব্যবসার মহা স্বর্গরাজ্য কায়েম করেছেন বিভিন্ন পত্রিকা ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধিরা। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে রংপুর বিভাগের লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা-পাটগ্রাম হয়ে ভারতীয় ফেন্সিডিল ও ইয়াবা ব্যবসার সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত ভুয়া কার্ডধারী কিছু সংবাদ প্রতিনিধিরা। তাদের নেপথ্যের কাহিনি রংপুরের প্রশাসন থেকে শুরু করে জনগণের কাছে অন্ধকারেই রয়ে গেছে এবং এদের মাদক সেবনের টাকা যোগাড় করতে চাঁদাবাজিকে পুঁজি করে বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন অফিস আদালতে উঠতি বয়সের তরুণীদেরকে দিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরির আড়ালে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা এখন নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের এই নামধারী সাংবাদিকরা ক্যামেরার লেন্স, জ্যাকেট ও অত্যাধুনিক ব্যাগের ভেতরে করে নিয়ে তাদের চিহ্নিত স্থানে কাস্টমারের চাহিদা মাফিক ইয়াবা ট্যাবলেট সরবরাহ করে থাকেন। বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কথা বলে নামী-দামী প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তোলে পকেটস্থ করে। এরা বেশির ভাগই রংপুর প্রেসক্লাবের অবৈধ কমিটির সদস্য। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশয়দাতাদের ইন্ধনে দৈনিক সংবাদের রংপুর প্রতিনিধি লিয়াকত হোসেন বাদলকে জিম্মি করে যে ঘটনা ঘটিয়েছে এর পেছনে রয়েছে প্রেসক্লাবের অবৈধ সেক্রেটারী মেরিনা লাভলী, আব্দুর রউফ গং। সে বিষয়ে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে যে মামলা আদালতে চলমান রয়েছে সেক্ষেত্রে পুনরায় প্রেসক্লাবের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সমাজসেবা কর্মকর্তা। তাদের পক্ষে আদালত কর্তৃক সুষ্ঠ আদেশ প্রদান করেছে। যাইহোক নানা জল্পনা কল্পনা দীর্ঘদিনের রংপুরের প্রকৃত সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করাসহ সকল বিষয়ে মেরিনা লাভলী গং জড়িত। প্রেসক্লাবের অবৈধ সেক্রেটারী মেরিনা লাভলী জুলাই বিপ্লবের পর বিভিন্ন পত্রিকার কথা বলে মটর মালিক সমিতির কাছ থেকে মোটা অংকের ডোনেশন গ্রহণ করেন। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের জেলা মহিলা দলের নেত্রী মেরিনা লাভলীর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কোটি কোটি টাকা ও কয়েক’শ একর জমি এবং প্রাসাদের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না দেশের বিশেষ বাহিনী। অথচ মেরিনা লাভলীর স্বামী সাব্বির আহমেদ একসময় বোমারু সাব্বির হিসেবে অতি পরিচিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মহাজোটের শরীক দল জাসদের ব্যানারে নির্বাচন করেছিলেন এবং ডামি নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছিলেন। রংপুরে জনসম্মুখে কয়েকদিন আগে মেরিনা লাভলীর বাড়ীতে পুলিশী তল্লাসীর নামে নাটকীয়তা করেন একাধিক কর্মকর্তা। সম্প্রতি মেরিনা লাভলী তাদের মুন স্টুডিওতে নারী ব্যবসার স্বর্গরাজ্য কায়েম করেছিলেন। এতে কেন্দ্র করে তৎকালীন সময় দৈনিক যুগের আলোর নির্বাহী সম্পাদক ওমর ফারুককে তার অফিসে সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওমর ফারুক অকালে মৃত্যুবরণ করেন। সে বিষয়ে ওমর ফারুকের স্ত্রী শাহানাজ বেগম বিশেষ প্রতিনিধিকে বলেছিলেন এই মেরিনা লাভলী কোন এক সময় জনৈক কর্মকর্তার সঙ্গে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ তুলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। অপরদিকে রংপুরের দৈত্য পেশার সাংবাদিকদের অনেকেই চাকুরী শেষ করে অবসরে গেলে তাদের বিষয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আব্দুর রউফ গ্রামের বাড়ী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পল্লী গ্রামে। আব্দুর রউফ কাউনিয়া উপজেলার মীরবাগ ডিগ্রী কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান থাকাকালীন সময় নারী ও মাদক কেলেঙ্কারীর মধ্য দিয়ে কলেজের সুনাম নষ্ট করেন। এমনকি বাংলাদেশ ওর্য়াকার্স পার্টির সক্রিয় সদস্য হিসেবে চাকুরী গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে ধাপ লালকুঠি স্কুল ও কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন এবং সেখানেও জনৈক শিক্ষিকার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়ান, দোকানের পজিশন বিক্রি ও ৫জন ল্যাব সহকারী নিয়োগ দিয়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। আব্দুর রউফ ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ধাপ লালকুঠি স্কুল ও কলেজে কর্মকালীন স্কুল শাখায় ৭টি ভর্তি ও কলেজ শাখায় ৭টি ভর্তি বাণিজ্য করেন বলে উক্ত কলেজের শিক্ষক আব্দুল কাইয়ুম প্রতিনিধিকে জানান। এতেও শেষ নয় লালমনিরহাট উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করে সেখানে তামান্না ইয়াসমিন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করেন। পরবর্তীতে জানাজানি হলে এলাকার জনগণ ও শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে পোস্টারিং সহ প্রতিবাদ মিছিল করেন এবং তাকে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হয়। তামান্না ইয়াসমিন বিশেষ প্রতিনিধিকে বলেন আমার জীবন নিয়ে নেশাখোর আব্দুর রউফ ছিনিমিনি খেলছে তাই তাকে আমি বিচারের মুখোমুখি করবোই। আর এক চিহ্নিত সাংবাদিক দালাল হিসেবে পরিচিত জিএম জয়। দৈনিক দাবানল পত্রিকায় কর্মচারী হিসেবে কাজ করে থাকলেও নিজেকে বার্তা সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। কোন এক সময় দৈনিক দাবানল পত্রিকায় চাঁদাবাজ হিসেবে ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ হলে জনগণের সামনে ভিন্ন বিষয়ে জনগণকে বোঝানোর জন্য এড়িয়ে যায় এবং জমির দালালী শুরু করে। ভুয়া ভাই সেজে পঞ্চগড় জেলার জনৈক সেনাবাহিনী সদস্য ও অন্য একজন সহযোদ্ধা সহ মিথ্যা ভাই পরিচয় দিয়ে রংপুরের মোবারক এর জমি দখল করার পায়তারা করেন। রংপুর তাজহাট থানার তামপাট মৌজার কবীর উদ্দিন ভুয়া দলিলের মাধ্যমে নিজের নামে লিখে নেন। এমনকি এই জিএম জয় তৎকালীন সুনামধন্য পুলিশ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলামের কাছে ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেছিলেন ও জনৈক আইনজীবীর কাছ থেকেও মোটা অংকের চাঁদা দাবী করেছিলেন। তাই জমির প্রকৃত মালিক মোবারক আলীর মেয়ে মাজেদা খাতুন বলেন এই জিএম জয় রংপুরের সাধারণ মানুষের সঙ্গে চাঁদাবাজি, ভূমি দখল ও নারী ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত বলে ভুক্তভোগী মাজেদা বেগম বলেন। কিছুদিন আগে আহসান হাবিব রোমিও’র কাছ থেকে একটি মানবাধিকার সংস্থা পরিচালনার জন্যও চাঁদা দাবী করেন জিএম জয়। সকল বিষয়ে গত কয়েকদিন আগে রংপুরে ভুঁইফোড় নামে সাংবাদিক সংগঠনের সেক্রেটারী সেজে চাঁদাবাজির রাস্তা প্রসার করে চলেছেন। এই জিএম জয়ের নামে বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার রংপুর প্রতিনিধি রেখা মনি যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন মেট্টো থানায়। প্রেসক্লাব নিয়ে দৈনিক গণকন্ঠ, দৈনিক মুক্ত খবর সহ বেশকিছু পত্রিকায় রংপুর প্রেসক্লাব নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তার মূর কেন্দ্রবিন্দু হলো ৩৩ বছরের রংপুর প্রেসক্লাবে গুটিকয়েক গণমাধ্যমকর্মীরা কুক্ষিগত করে অবৈধ পন্থায় জোরপূর্বক প্রেসক্লাবকে নিজের বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। অথচ বাংলাদেশ সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পদ ছিল। এরশাদ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় রংপুরের কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য মিলনমেলা নামে পরিচিত সরকার বাহাদুরের পক্ষে যৎসামান্য টাকা গ্রহণ করে প্রেসক্লাবের নামে জমি লিখে দেন। সেখানে উল্লেখ করেন রংপুরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে শুরু করে গণমানুষের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে যে পরিচয় বহন করে নামকাওয়াস্তে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীরা লুটেপুটে খাচ্ছে সে বিষয়ে জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের ঠাঁই নাই উল্লেখ করে গণমাধ্যমকর্মীদের পক্ষে ৩ শতাধিক সাংবাদিককে বাইরে রেখে ৩২জন সাংবাদিক লুটেপুটে খাচ্ছে। বিভিন্ন তদন্ত করে দেখা গেছে এখানে যে গণমাধ্যমকর্মী নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন সে আওয়ামী লীগ সরকারের মহিলা লীগের নেত্রী মেরিনা লাভলী। এই মেরিনা লাভলীর শত শত কোটি টাকার অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সম্পদ প্রশাসনের নখদর্পনে থাকলেও কোনক্রমেই তাদের ঘুম ভাঙ্গছে না। এর নেপথ্যের কাহিনী রংপুরবাসীর জানা থাকলেও তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কথা বলার সাহসে দীর্ঘদিন কেউ পায়নি। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের খাসবাগ এলাকা, পাবর্তীপুর এলাকায় কয়েক একর সম্পদের বিষয়ে রংপুরে দায়িত্বরত প্রশাসনের জানা থাকলেও কোনক্রমেই তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে না। রংপুর প্রেসক্লাব দীর্ঘ ১৯৯১ সাল থেকে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বেচ্ছাসেবি সমাজ কল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিষ্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৬১ সালে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বেচ্ছাসেবি সমাজ কল্যাণ সংস্থা সমূহ (রেজিষ্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর আইনের আওতায় নিবন্ধিত বটে। নিবন্ধনকালে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং আইনের সকল বিধিবিধান মানিয়া চলার শর্তে সংস্থাটিকে নিবন্ধন প্রদান করা হয়েছিল। নিবন্ধনকালীন সংস্থাটির যে গঠনতন্ত্র অনুমোদনের মাধ্যমে সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনা করিবার কথা স্বীকৃত ছিল কিন্তু সংস্থাটি সেইরূপ কার্যকলাপ পরিচালনা হইতে বিরত ছিল/ব্যর্থ হয়েছে। সংস্থাটি যেহেতু সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বেচ্ছাসেবি সমাজকল্যাণ সংস্থা সমূহ (রেজিষ্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর আইনের আওতায় নিবন্ধিত সেহেতু অত্র সংস্থা বর্ণিত অধ্যাদেশের বিধিমালা মোতাবেক পরিচালিত হইবে ও বিধিবিধান মেনে চলবে। প্রেসক্লাবকে নিয়ে রংপুর সদর সহকারী সিনিয়র জজ আদালতে যে মামলা চলমান রয়েছে সে বিষয়ে বিধিকে তোয়াক্কা না করে আদালত যে আদেশ দিচ্ছে সেটা প্রশ্নবদ্ধ। রংপুরের একাধিক আইন ব্যবসায়ী আবেগকন্ঠে বলেন যে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে চলমান মামলা বিদ্যমান রয়েছে সেক্ষেত্রে লোয়ার কোর্টে চলতে পারে না। তবুও মামলাটি চলমান রয়েছে। রংপুর প্রেসক্লাব এর কাগজপত্র প্রশাসককে বুঝিয়ে না দেয়ায় দীর্ঘ ৩৩ বছরের অডিট কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না সরকার প্রজ্ঞাপিত প্রশাসক। এ বিষয়ে সার্চ ওয়ারেন্ট হলেও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে, এতে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ। এছাড়াও সরকারি নির্দেশ অমান্য করে রংপুর প্রেসক্লাব দখলের অপচেষ্টা মামলার আসামি মেরিনা লাভলীসহ সহযোগীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে রংপুরে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ ও বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলন। বুধবার ২৭ আগস্ট,২০২৫খ্রি. তারিখ দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে জমা দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবের পর সরকার বৈষম্য দূরীকরণে বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনকৃত রংপুর প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী রংপুরে কর্মরত সকল সাংবাদিকের সদস্য হওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে মাত্র ৩৩ জন সদস্য প্রেসক্লাবকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। এতে সাংবাদিকদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে এবং বাধ্য হয়ে ‘বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলন’ গড়ে উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়, বহিষ্কৃত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মহিলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী তার সহযোগীদের নিয়ে সাংবাদিকদের সদস্যভুক্ত হতে দীর্ঘদিন ধরে বাধা সৃষ্টি করছেন। এমনকি তিনি গত ২৩ জানুয়ারি,২০২৫খ্রি. তারিখে সহযোগীদের নিয়ে প্রেসক্লাবে অবৈধভাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে রংপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা হয়, মামলা নং-৩০/২৫। মামলা হলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি। স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রেসক্লাবের নথিপত্র মেরিনা লাভলী তার নিজ বাড়িতে গোপন করে রেখেছেন। এ বিষয়ে এডিএম আদালত তার বিরুদ্ধে সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করলেও পুলিশ কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। ফলে সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। সাংবাদিক নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অবিলম্বে মেরিনা লাভলীসহ মামলার সকল আসামিকে গ্রেফতার এবং সার্চ ওয়ারেন্ট কার্যকর করতে হবে। অন্যথায় রংপুরে কর্মরত সাংবাদিকরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন। বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলন রংপুরের প্রধান সমন্বয়ক এসএম জাকির হুসাইন বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী দোসররা প্রেসক্লাব রংপুর দখল করে রেখেছিল। রংপুরে আড়াই শতাধিক সাংবাদিক থাকলেও প্রেসক্লাবের সদস্য মাত্র ৩৩ জন ছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর তাদের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের মুখে কমিটি বিলুপ্ত করে দিয়ে সরকার প্রশাসক নিয়োগ করে এবং রাষ্ট্রনিযুক্ত প্রশাসক, সদস্য অন্তর্ভুক্তিকরন সহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। দীর্ঘ অনিয়মের অডিট করার জন্য প্রশাসকের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলিকে প্রেসক্লাবে নথিপত্র বুঝে দেয়ার জন্য দফায় দফায় চিঠি দিলেও তিনি তা আমলে নেননি। এর প্রেক্ষিতে কাগজপত্র বুঝে নেয়ার জন্য এডিএম কোর্ট থেকে ২৪ দিন আগে সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করা হয় মেরিনা লাভলীর বিরুদ্ধে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মহানগর পুলিশ এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়নি । কাগজপত্র না থাকায় অডিট শুরু করতে পারছে না প্রশাসক। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র নিযুক্ত প্রশাসক প্রেসক্লাবের কমিটি বহিষ্কার করে প্রেসক্লাবের কার্যক্রম শুরু করলেও ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ আওয়ামী লীগ নেত্রী মেরিনা লাভলি সহযোগীদের নিয়ে প্রেসক্লাবে হামলা চালান। এর প্রেক্ষিতে সমাজসেবা অধিদপ্তর সরকারি কাজে বাধা দেয়ার জন্য মেরিনা লাভলি সহ দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলার সাত মাস অতিবাহিত হলেও তাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না। উল্টো তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলার আসামি হয়েও৷ প্রেসক্লাবের রাষ্ট্রপক্ষের নিযুক্ত প্রশাসকের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মিথ্যা, অসত্য এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে আদালতে মামলা করছে। এতে সাংবাদিক মহলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এস এম জাকির হুসাইন বলেন, পুলিশ প্রশাসনের এ ধরনের নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে, তারা এখনো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পক্ষ নিয়ে গণঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে। আমরা বড় ধরনের আন্দোলনে নামতে চাইনা পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে, ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেলে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব। যার সব দায় নিতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে। রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শরিফা বেগম শিউলি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, পুলিশ প্রশাসন এখনও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের প্রটেকশন দিয়ে আসছে। তাই তারা মামলার আসামি সত্যেও প্রকাশ্যে বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে তদবির করার দুঃসাহস পাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের রংপুর বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক স্বাধীন বলেন, প্রশাসনের অসহযোগিতায় প্রেসক্লাব, রংপুর এখনও স্বৈরাচারদের অবৈধ দখলে। ফলে ২শতাধিক কর্মরত সাংবাদিক প্রেসক্লাবের সদস্য হতে পারছেনা।
